"Don't. Sooner or later, you'll have to leave."
"Do you think I don't know all these?"
"No. I just think you have forgotten what is on stake here."
"I do remember what is on stake. And I do remember the rules. And don't compare me with anyone else...you have no idea what I have been through."
"I know that. I am only a small part of you. I just wanted to remind you something: momentary happiness hasn't done anything good to anyone. And you know this better than anyone else."
"You don't understand. There is a storm inside me, an everlasting fight... between dos and don't s, between happiness and gloom, between good and evil, between you and me...how am I supposed to suppress that?"
"Well...being a participant of this war, I would advise you to continue with it."
"And for once again, you don't understand my point. This war - it's not fair. So many times I have to kneel before the evil. And even if I'm on the side of good, I tend to lose the war. I am tired of this, and I would love to end it very soon."
"Nothing is fair in love and war Soumyo. Remember the rainy evening?"
"Don't play this nasty game with me."
"Well, you are making me."
"Oh, do you think I enjoy it?"
"No. The only thing I actually think, is that you need someone to remind you a few things very often. I could be your 'aegis', you know. Would you like me to be that for you?"
"Alright. Here is the thing. I know that you used that word intentionally. And let me be very clear with you. I am not playing games. Not with you, not with myself. Yes, I know the consequences, but I am matured enough to control it."
"Okay. Off I go then. I will see you at the other side of the story."
"By the way, you won't have to predict things anymore."
"And why is that so?"
"Because I'm the one who's going to predict things this time. My journey will end well. And it doesn't matter whether you want it or not. I can see it."
"Well, good luck, then!"
-Dec 27th '11
“I speak in the present tense because for us time does not exist, only space. And because it seems only yesterday.”
Tuesday, December 27, 2011
Monday, December 26, 2011
Notes from a living room: 21
"Well...?"
"Well what?" I astonished.
"I don't know. You tell me."
"There is nothing to say, at all." I turn my face away.
"Actually, I was going through a few things, and found some connections, so just asked."
"What are you talking about?"
"Nothing important. Forget it. How's the fever?"
"I'm recovering. What connections are you talking about?"
"You will know very soon. Bye."
Soon the person asking questions vanishes, and I become lonely all over again.
Dec. 26th '11
"Well what?" I astonished.
"I don't know. You tell me."
"There is nothing to say, at all." I turn my face away.
"Actually, I was going through a few things, and found some connections, so just asked."
"What are you talking about?"
"Nothing important. Forget it. How's the fever?"
"I'm recovering. What connections are you talking about?"
"You will know very soon. Bye."
Soon the person asking questions vanishes, and I become lonely all over again.
Dec. 26th '11
Thursday, December 22, 2011
নররাক্ষস
রাজপুর পেরিয়ে বারুইপুর বাজার এসে পড়তেই রাস্তার পাশে বড় বড় হোর্ডিংগুলোয় লেখাটা চোখে পড়ল।
অবশ্য এর আগের ঘটনা বলে রাখা ভালো। খুড়তুতো দাদার বিয়ে উপলক্ষ্যে রওনা দেওয়ার আগেই এক নেটওয়ার্কিং সাইটে সুপ্রতিম মনে করিয়ে দিয়েছিল একটা ছোটো ডায়রি সঙ্গে রাখতে। মানে, নতুন কোনও গল্পের প্লট এলে যাতে লিখে রাখতে পারি। হেসেছিলাম। বিয়ের মত অনুষ্ঠানের মাঝখানে গল্পের কথা কেই বা চিন্তা করতে পারে? কিন্তু তত্ত্ব নিয়ে মেয়ের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার ঘন্টাখানেকের মধ্যেই আমার সে ধারনা গেল ভেঙ্গে। বাইপাস হয়ে কামালগাজীর রাস্তায় ঢুকে আধঘন্টা মতো যেতেই বারুইপুর বাজার চত্বর এসে পড়ল। প্রাইভেট গাড়ির শীততাপনিয়ন্ত্রিত আবহাওয়া উপভোগ করতে করতে পেছনের সীটে বসে থাকা খুড়তুতো ভাইয়ের সাথে গল্প করার ফাঁকেই বিশাল হোর্ডিং-এ লেখাটা চোখে পড়ল।
সার্কাস
বিশেষ আকর্ষণ
নররাক্ষস।
বিশালাক্ষি মাঠ।
বারুইপুর (ফায়ার ব্রিগেডের নিকট)
আকর্ষণীয়ই বটে। লেখার সাথে কয়েকটা ছবিও চোখে পড়ল। সব কটাই নররাক্ষসরূপী মানুষের। গাড়ির চালক চেনা লোক। এদিককারই। জিজ্ঞেস করতে বিস্তারিত জানিয়ে দিল। একের পর এক শো-তে শাক, পাতা, পাথর, কাঁটাগাছ, জ্যান্ত মুরগী সব খেয়ে ফেলছে, নিমেষে। আর তাকে দেখতেই উপচে পড়ছে ভীড়। নররাক্ষসই বটে। দিনে কমপক্ষে গড়ে চোদ্দ-পনেরটা শো হলে শুধু মুরগীই পেটে যাচ্ছে পনেরটা। লোকটাও নাকি অদ্ভুত। শুধু খেয়েই চলেছে। এতটুকু বিশ্রাম নেই। ক্লান্তিও নেই।
ড্রাইভারের কথায় কৌতুহল বাড়ল। ছবিতে নররাক্ষসের মুখের নৃশংস ভাব স্পষ্টই ফুটে উঠেছে। অত্যধিক লাল রঙে রাঙিয়ে দেওয়ার ফলে সে মুখ আরও ভয়াবহ লাগছে। জ্যান্ত মুরগী খাওয়ার দৃশ্য কল্পনা করে শিউরে উঠলাম। ড্রাইভারের কথা যদি ঠিক হয়, লোকটা সম্ভবত মানুষ নয়। অন্তত মনের দিক থেকে তো নয়ই। শুধু জীবন্ত প্রাণী খাওয়ার জন্যেই নয়, ইঁট, পাথর চিবিয়ে খাওয়ার মত ক্ষমতাও সাধারণ মানুষের নেই। নররাক্ষসই বটে।
অকাজের কথায় কান দিয়ে লাভ নেই ভেবে ‘নররাক্ষস’-কে মন থেকে ঝেড়ে ফেললাম। এর পরের দু’-তিনদিনে বিয়েবাড়ির হাজার কাজে কথাটা ভুলেই গেলাম। আনন্দ আর আলোর রোশনাই-এর মাঝে একটা আদিম মানুষের চিন্তা মাথায় আসার কথাও নয়। কিন্তু ভাগ্য মানুষকে যে কোথায় কিভাবে নিয়ে গিয়ে ফেলতে পারেকেউ জানেনা। তাই নররাক্ষসের কথা জানার একমাসের মধ্যেই যে তাকে স্বচক্ষে দেখতে পাব, একেবারে চোখের সামনে, একথাও ভেবে উঠতে পারিনি।
ঘটনাটা ঘটল এরকম, সাউথ ফ্লোরিডাতে থাকা এক বন্ধুর ছুটিতে কলকাতায় ফেরার কথা ছিল। হঠাৎই একদিন বাড়িতে ফোন।
“হ্যালো সৌম্য?”
“কিরে অনন্ত নাকি? কবে ফিরলি?”
“এইতো গত পরশু। এখনও জেটল্যাগ কাটেনি। শোন, যে কারনে ফোনটা করা, সামনের শুক্রবার আমি আমাদের আদি বাড়িটায় যাচ্ছি। জমি সংক্রান্ত কিছু ব্যাপার। কিন্তু সেটাই বড় কথা নয়। তোকে আর দেবোপমকেও আসতে হবে। দু’-তিনদিন জমিয়ে আড্ডা মারা যাবে।”
“তোদের আদি বাড়ি মানে ওই বারুইপুরেরটা তো?”
“হ্যাঁ। দেবোপমকে আগেই ফোন করেছি। ওর আপত্তি নেই। তোর সময় হবে তো?”
“নিশ্চয়ই।”
“বেশ। তাহলে শুক্রবার দেখা হচ্ছে। তোদের জন্য আলাদা করে ঘরগুলো পরিষ্কার করে রাখতে বলেছি ওখানের কাজের লোকগুলোকে। এখন ছাড়লাম তাহলে।”
কথামতো শুক্রবার বিকেলের মধ্যেই অনন্তদের আদি বাড়িটায় এসে পড়লাম। মনে পড়ল ছোটোবেলায় আমরা এই বাড়িটায় একসময় খেলতাম। বয়সের সাথে মানুষ কতটা বদলে যায়। শুধু বদলায়না সেই স্মৃতিগুলো। লম্বা দালানের বাঁদিকে গাড়িটাকে রেখে দোতলায় এসে দেখি দেবোপম আগেই এসে পড়েছে। অনেকদিন পর ওদের দেখে খুব ভালো লাগল। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিন পুরোনো বন্ধুতে আড্ডা জমে উঠল।
রাতের খাওয়া-দাওয়াটা বেশ ভালোই হল। বাইরে থেকে অর্ডার দিয়ে আনানো পোলাও, মাংস, রাশীকৃত তরকারি ও মিষ্টান্ন উদরসাৎ করে তিনজনে চাঁদের আলোয় বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম। ঘুম পেয়ে গিয়েছিল। তাই একথা-সেকথার পর শুভরাত্রি জানিয়ে নিজের ঘরে ফিরে আসছি, এমন সময়ে অনন্ত ডাকল।
“ভালো কথা, এখানে সামনে সার্কাস এসেছে। তোরা চাইলে কাল একবার ঘুরে আসা যায়।”
আমার মুখ দিয়ে বেরিয়ে পড়ল, “এটা কি সেই নররাক্ষসের ব্যাপারটা?”
“হ্যাঁ। ওটার জন্যই যাওয়া।” বিস্ময়মাখানো গলায় অনন্ত বলল।
ব্যাপারটা যে আগে শুনেছি, আর নররাক্ষসকে দেখার ইচ্ছে যে আমারও ছিল, সে কথা আর বলা হয়ে উঠল না।
পরেরদিন সকাল থেকে বিকেল কিভাবে কাটল তা বলা কঠিন। অজানার অপেক্ষায় আর উত্তেজনায় সময় দ্বিগুন গতিতে কেটে গেল। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হওয়ার মুখেই বারুইপুর ফায়ার ব্রিগেডের কাছে সার্কাসের সামনে উপস্থিত হলাম। এবং তারপর টিকিট কেটে সোজা ভেতরে।
সাড়ে চারটের শো। এখন সোয়া চার। হাতে কিছুটা সময় আছে দেখে কাপড়ের তাঁবুর সামনেটায় দাঁড়িয়ে একটা সিগারেট ধরালাম। ডিসেরম্বরের শুরু, তাও ঠান্ডাটা ভালো করে পড়েনি। একটা শিরশিরে ভাব আছে শুধু। তবে এদিকটা ফাঁকা বলে মনে হয় হাওয়াটাও বেশি। কলকাতার দিকে যন্ত্র আর মানুষের ঠেলাঠেলিতে শীতকেও জায়গা করে নিতে অসুবিধে হচ্ছে। মাঝে মাঝে মনে হয় মানুষ নিজের চাহিদার জন্য কতকিছু করে ফেলছে, তার সবই কি ভালোর দিকে যাচ্ছে? অনুরাধার কথা মনে পড়ে গেল।
“সৌম্য!”
ডাক পড়েছে। তার মানে শো শুরু হয়েছে। সিগারেটটা ছুঁড়ে ফেলে ঢুকে পড়লাম।
প্রথম আধঘন্টা-চল্লিশ মিনিট এটা ওটা দেখানোর পরেই আসল খেলা শুরু হল। নররাক্ষস। দর্শকদের হাততালি, উৎকন্ঠা আর উত্তেজনার মধ্যেই স্টেজের ডানদিকের পর্দার আড়াল থেকে সাড়ে ছ’ফুট লম্বা যে চেহারাটা বেরিয়ে এল, তাকে নররাক্ষস না বলে অনায়াসে রাক্ষস বলেও চালানো যায়। গোটা মুখে লাল রঙ মেখে আরও বীভৎস লাগছে। এ জিনিস পথেঘাটে কেউ দেখলে নির্ঘাৎ হার্টফেল করবে।
খেলা শুরু হল। কিলো কিলো শাকসব্জী কাঁচা খেতে দেখে উৎসাহ কমে গেল। চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে তাঁবুর ওপরের দিকে তাকালাম। হলুদ রঙের কাপড় দিয়ে তৈরী ছাউনির দিকে চেয়ে বহুদিন আগের অনামিকার কথা মনে পড়ে গেল।
অনামিকা। অবশ্য এটা ওর আসল নাম নয়। নিষেধ করেছিল আসল নাম নিতে। ওর মত মেয়ে খুব কম দেখেছি। খুব সাধারন, অথচ কি অসাধারন। মিথ্যে বলবনা, অল্প কয়েকদিনের আলাপেই অনামিকাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম। তবে এই ভালোবাসা প্রেমিকের ভালোবাসা নয়। একটু আলাদা। অবশ্য বলতে পারিনি ওকে কোনওদিন। হয়তো বললে বুঝতও না। কোনও এক অচেনা, অজানা জগতের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়তে চেয়েছিল ও। যেখানে ওকে কেউ কোনও মাপকাঠিতে বিচার করবেনা। উদ্দেশ্যহীনভাবে ভালোবাসবে। ‘আপনি আমার সাথে আসতে পারেন, পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত।’ আমি বলেছিলাম। কিন্তু সাড়া পাইনি। হয়তো ও ভয় পেয়েছিল। অনামিকা একজনকে ভালোবাসত। মনপ্রাণ দিয়ে। তাই ভুলতে হয়েছিল ওকে, বাধ্য হয়ে।
একটা জান্তব চীৎকারে স্টেজের দিকে চোখ পড়তে বুঝতে পারলাম খেলা বদলে গেছে। এবার খেলা জন্তুর সাথে মানুষের। আর্তনাদটা এসেছে জন্তুর গলা থেকে। একটা মুরগী। বিধাতার হাতে বন্দী নিরূপায় মানুষের মতোই অট্টহাস্যরত নররাক্ষসটার বাঁহাতের ফাঁকে ছটফট করছে জ্যান্ত একটা মুরগী। আসন্ন মৃত্যুর গন্ধে দর্শকদের মধ্যে চঞ্চলতা লক্ষ্য করলাম। জীবনের শেষ ইঙ্গিতস্বরূপ পাগলের মতোন নিস্ফল প্রয়াসে একবার ডেকে উঠল পাখিটা। খেলা শুরু হল।
জ্যান্ত মুরগীটাকে বাঁহাতে ধরে ডানহাত দিয়ে গলাটা মুচড়ে দিল সে। মাটি থেকে ছ’ফুট উঁচুতে ধরা মুরগীটার পাদু’টো তখনও ক্রমাগত হাওয়ায় সাঁতরে চলেছে। এলোপাথাড়ি, পাগলের মতো। কয়েক মিনিটের মধ্যে ব্যাপারটা স্তিমিত হয়ে আসে। আমার পাশের দর্শকাসনে বসে থাকা লোকেরা নিশ্চুপ। আমার মতোই তারাও বিনা বাক্যব্যয়ে নিষ্ঠুর এক মৃত্যুকে প্রত্যক্ষ করছে।
নিথর মুরগীটার দেহ থেকে পালকগুলো ছাড়াতে থাকে লোকটা। মুরগীটার নগ্ন, রক্তাক্ত দেহ থেকে লোকটার নোংরা হাত দিয়ে পালক ছাড়ানোর দৃশ্য দেখে অনুরাধার কথা মনে পড়ে গেল। নীল হয়তো এভাবেই শহরের কোনও এক অজানা, অচেনা অন্ধকার কোণায় ওর শরীরটাকে উপভোগ করেছিল। আবেগের বশেই অনুরাধা একদিন আমার কাছে নীলের সাথে ওর শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার কথা বলে ফেলেছিল। আন্দাজ অবশ্য আমি আগেই করেছিলাম। চতুষ্কোণ প্রেম। অদ্ভুত সম্পর্ক। আমি অনুরাধাকে ভালোবাসি। অনুরাধা পাগলের মতোন চায় নীলকে। এদিকে নীল আর মধুরার প্রেম সর্বজনবিদিত। যা হওয়ার তাই হয়েছিল। অনুরাধাকে ব্যবহার করে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল নীল, চলে গিয়েছিল মধুরার সাথে। ভালোবাসার ওপর থেকে বিশ্বাস চলে গিয়েছিল অনুরাধার। শরীরী ভালোবাসাকে আপন করে নিয়ে মানুষের ভীড়ে হারিয়ে গিয়েছিল। আর ফেলে গিয়েছিল আমাকে - যে ভালোবাসার অন্ধ বিশ্বাসে সব মুখের মধ্যেই সেই চেনা মুখটা খুজে বেড়াতে শুরু করেছিল...পাগলের মত।
ইতিমধ্যে মুরগী-নিধন ও উদরসাৎ পর্ব শেষ হয়। যে খেলার শুরু হয়েছিল হাততালি দিয়ে, তা শেষ হয় নিস্তব্ধতা দিয়ে। পাশে তাকিয়ে দেখলাম দেবোপমের সীট ফাঁকা। উঠে গেছে কখন, টের পাইনি। সহ্য না করার মতোই ব্যাপার। গায়ক মানুষ ও, এরকম জ্যান্ত মুরগী ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাওয়ার দৃশ্য ওর নরম মন সইতে পারবেনা।
এই হেন ‘নররাক্ষস’-খ্যাত সার্কাস দেখার পর তিনজনেই নিজের নিজের বাড়ি ফিরে এলাম। বেশ কিছুদিন কেটেও গেল। কিন্তু একটা অস্বস্তি মনের মধ্যে রয়ে গেল। বারবারই মনে হতে লাগল, কি একটা যেন ঠিক নেই, কি একটা ধরতে পারলাম না, এমন কিছু একটা হয়ে গেল, যেটা বোঝা উচিত ছিল, কিন্তু পারলাম না।
একদিন সন্ধেবেলা হাটতে হাটতে রবীন্দ্র সরোবরের ধারে গিয়ে বসলাম। একা। নির্জনে, নিভৃতে বসে একটু ভাবনাচিন্তা করার জন্য। অনুরাধা বারবার জিজ্ঞেস করত আমার এই পাগলামির কারন। কেন কারন-অকারনে, সময়-অসময়ে এখানে এসে বসে থাকি। ঠিকঠাক উত্তর কোনওদিনই দিতে পারিনি। হয়তো ঠিক উত্তরটা আমি নিজেও জানতাম না। অনুরাধার কথা ভাবতে ভাবতেই নিজের জীবনের সাথে ওর কথা মিলিয়ে একটা প্রশ্ন মাথায় চলে এল, আর সঙ্গে সঙ্গে পুরো গল্পটা যেন ধোঁয়াশামাখা পর্দার আড়াল থেকে আমার সামনে বেরিয়ে এসে দাঁড়িয়ে পড়ল।
“নররাক্ষস কে?”
হ্যাঁ। প্রশ্ন এটাই। কে এই নররাক্ষস? একজন, যে সময় আর সুযোগের সঠিক ব্যবহার করে রাক্ষসের মত ছিঁড়ে খুঁড়ে খেয়েছে একটা মেয়ের শরীর, নিঃস্ব করে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে এক কোণায় আর চলে গেছে অন্য এক নারীর সাথে মুখোশপরা ভালোমানুষের মত জীবনের বাকী সময়টা কাটাবে বলে। নাকি অন্য একজন, যে একজন সৎ মানুষের মত থাকতে চেয়েছিল এক নারীর পাশে, বার বার প্রত্যাখ্যাত হয়েও মানতে চায়নি হার, শপথ নিয়েছিল সেই মেয়েকে সে রক্ষা করবেই এক পশুর হাত থেকে...কিন্তু সেই কথা রক্ষা করতে না পেরে এক প্রেতাত্মার মত জীবন যাপন করে চলেছে, এক রাক্ষসের মতোই নিজের সব সুখ, দুঃখ, ব্যথা, বেদনা ভুলে কীসের খোঁজে ছুটে চলেছে সে নিজেও জানেনা?
প্যান্ট ঝেড়ে উঠে পড়লাম। সরোবরের ওপাশটার কালো অন্ধকারে ধূসর সাদা পর্দার মতোন কুয়াশা। ডিসেম্বর মাস। আর গাছপালা বেশী থাকায় এদিকটায় ঠান্ডাটা একটু বেশীই পড়ে। বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। এলোমেলো পায়ে, মাথায় অজস্র হিজিবিজি চিন্তা নিয়ে। দূরের ল্যাম্পপোস্ট থেকে ঠিকরে পড়া আলোয় পেছনে একটা আবছা ছায়ার সৃষ্টি করেছে। একটু পরে হয়ত ওটাও মিলিয়ে যাবে। মিলিয়ে যাব আমি, অন্ধকার, আর এই রাত্রি।
ভালোবাসা মানুষকে কাছে আনেনা। বরং আরও দূরে ঠেলে দেয়। কিন্তু এই ক্ষণিকের পাওয়াই তার কাছে সব। মানুষের ভালোবাসা মানুষকে অন্ধ করেছে, করেছে লোভী। নামিয়ে এনেছে অন্ধকারের এক স্তর থেকে আরেক স্তরে। সন্ধের ম্লান অন্ধকারে ভাষা খুঁজে না-পাওয়া দুই শরীরের মত। এই পাপ ছিল, আছে, থাকবে। মানুষের মনে। ঠেলে দেবে অন্য কোনও মানুষকে এক নির্মম পরিণতির দিকে। যতদিন সে থাকবে, এক নারী থেকে আরেক নারীতে ঘুরে বেড়াবে, দিনের বেলা নর আর রাতের অন্ধকারে রাক্ষসের রূপ ধরে তান্ডব করবে, চোখের জল আর বিনিদ্র রাতের মাঝখানে হেসে বেড়াবে ‘হাহা’ করে, আর শেষরাতের স্বপ্নে তার সাদা দাঁত আর জ্বলজ্বলে হলুদ চোখদুটো বার করে বলবে –
“নররাক্ষস!”
- Dec 22nd '11
অবশ্য এর আগের ঘটনা বলে রাখা ভালো। খুড়তুতো দাদার বিয়ে উপলক্ষ্যে রওনা দেওয়ার আগেই এক নেটওয়ার্কিং সাইটে সুপ্রতিম মনে করিয়ে দিয়েছিল একটা ছোটো ডায়রি সঙ্গে রাখতে। মানে, নতুন কোনও গল্পের প্লট এলে যাতে লিখে রাখতে পারি। হেসেছিলাম। বিয়ের মত অনুষ্ঠানের মাঝখানে গল্পের কথা কেই বা চিন্তা করতে পারে? কিন্তু তত্ত্ব নিয়ে মেয়ের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার ঘন্টাখানেকের মধ্যেই আমার সে ধারনা গেল ভেঙ্গে। বাইপাস হয়ে কামালগাজীর রাস্তায় ঢুকে আধঘন্টা মতো যেতেই বারুইপুর বাজার চত্বর এসে পড়ল। প্রাইভেট গাড়ির শীততাপনিয়ন্ত্রিত আবহাওয়া উপভোগ করতে করতে পেছনের সীটে বসে থাকা খুড়তুতো ভাইয়ের সাথে গল্প করার ফাঁকেই বিশাল হোর্ডিং-এ লেখাটা চোখে পড়ল।
সার্কাস
বিশেষ আকর্ষণ
নররাক্ষস।
বিশালাক্ষি মাঠ।
বারুইপুর (ফায়ার ব্রিগেডের নিকট)
আকর্ষণীয়ই বটে। লেখার সাথে কয়েকটা ছবিও চোখে পড়ল। সব কটাই নররাক্ষসরূপী মানুষের। গাড়ির চালক চেনা লোক। এদিককারই। জিজ্ঞেস করতে বিস্তারিত জানিয়ে দিল। একের পর এক শো-তে শাক, পাতা, পাথর, কাঁটাগাছ, জ্যান্ত মুরগী সব খেয়ে ফেলছে, নিমেষে। আর তাকে দেখতেই উপচে পড়ছে ভীড়। নররাক্ষসই বটে। দিনে কমপক্ষে গড়ে চোদ্দ-পনেরটা শো হলে শুধু মুরগীই পেটে যাচ্ছে পনেরটা। লোকটাও নাকি অদ্ভুত। শুধু খেয়েই চলেছে। এতটুকু বিশ্রাম নেই। ক্লান্তিও নেই।
ড্রাইভারের কথায় কৌতুহল বাড়ল। ছবিতে নররাক্ষসের মুখের নৃশংস ভাব স্পষ্টই ফুটে উঠেছে। অত্যধিক লাল রঙে রাঙিয়ে দেওয়ার ফলে সে মুখ আরও ভয়াবহ লাগছে। জ্যান্ত মুরগী খাওয়ার দৃশ্য কল্পনা করে শিউরে উঠলাম। ড্রাইভারের কথা যদি ঠিক হয়, লোকটা সম্ভবত মানুষ নয়। অন্তত মনের দিক থেকে তো নয়ই। শুধু জীবন্ত প্রাণী খাওয়ার জন্যেই নয়, ইঁট, পাথর চিবিয়ে খাওয়ার মত ক্ষমতাও সাধারণ মানুষের নেই। নররাক্ষসই বটে।
অকাজের কথায় কান দিয়ে লাভ নেই ভেবে ‘নররাক্ষস’-কে মন থেকে ঝেড়ে ফেললাম। এর পরের দু’-তিনদিনে বিয়েবাড়ির হাজার কাজে কথাটা ভুলেই গেলাম। আনন্দ আর আলোর রোশনাই-এর মাঝে একটা আদিম মানুষের চিন্তা মাথায় আসার কথাও নয়। কিন্তু ভাগ্য মানুষকে যে কোথায় কিভাবে নিয়ে গিয়ে ফেলতে পারেকেউ জানেনা। তাই নররাক্ষসের কথা জানার একমাসের মধ্যেই যে তাকে স্বচক্ষে দেখতে পাব, একেবারে চোখের সামনে, একথাও ভেবে উঠতে পারিনি।
ঘটনাটা ঘটল এরকম, সাউথ ফ্লোরিডাতে থাকা এক বন্ধুর ছুটিতে কলকাতায় ফেরার কথা ছিল। হঠাৎই একদিন বাড়িতে ফোন।
“হ্যালো সৌম্য?”
“কিরে অনন্ত নাকি? কবে ফিরলি?”
“এইতো গত পরশু। এখনও জেটল্যাগ কাটেনি। শোন, যে কারনে ফোনটা করা, সামনের শুক্রবার আমি আমাদের আদি বাড়িটায় যাচ্ছি। জমি সংক্রান্ত কিছু ব্যাপার। কিন্তু সেটাই বড় কথা নয়। তোকে আর দেবোপমকেও আসতে হবে। দু’-তিনদিন জমিয়ে আড্ডা মারা যাবে।”
“তোদের আদি বাড়ি মানে ওই বারুইপুরেরটা তো?”
“হ্যাঁ। দেবোপমকে আগেই ফোন করেছি। ওর আপত্তি নেই। তোর সময় হবে তো?”
“নিশ্চয়ই।”
“বেশ। তাহলে শুক্রবার দেখা হচ্ছে। তোদের জন্য আলাদা করে ঘরগুলো পরিষ্কার করে রাখতে বলেছি ওখানের কাজের লোকগুলোকে। এখন ছাড়লাম তাহলে।”
কথামতো শুক্রবার বিকেলের মধ্যেই অনন্তদের আদি বাড়িটায় এসে পড়লাম। মনে পড়ল ছোটোবেলায় আমরা এই বাড়িটায় একসময় খেলতাম। বয়সের সাথে মানুষ কতটা বদলে যায়। শুধু বদলায়না সেই স্মৃতিগুলো। লম্বা দালানের বাঁদিকে গাড়িটাকে রেখে দোতলায় এসে দেখি দেবোপম আগেই এসে পড়েছে। অনেকদিন পর ওদের দেখে খুব ভালো লাগল। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিন পুরোনো বন্ধুতে আড্ডা জমে উঠল।
রাতের খাওয়া-দাওয়াটা বেশ ভালোই হল। বাইরে থেকে অর্ডার দিয়ে আনানো পোলাও, মাংস, রাশীকৃত তরকারি ও মিষ্টান্ন উদরসাৎ করে তিনজনে চাঁদের আলোয় বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম। ঘুম পেয়ে গিয়েছিল। তাই একথা-সেকথার পর শুভরাত্রি জানিয়ে নিজের ঘরে ফিরে আসছি, এমন সময়ে অনন্ত ডাকল।
“ভালো কথা, এখানে সামনে সার্কাস এসেছে। তোরা চাইলে কাল একবার ঘুরে আসা যায়।”
আমার মুখ দিয়ে বেরিয়ে পড়ল, “এটা কি সেই নররাক্ষসের ব্যাপারটা?”
“হ্যাঁ। ওটার জন্যই যাওয়া।” বিস্ময়মাখানো গলায় অনন্ত বলল।
ব্যাপারটা যে আগে শুনেছি, আর নররাক্ষসকে দেখার ইচ্ছে যে আমারও ছিল, সে কথা আর বলা হয়ে উঠল না।
পরেরদিন সকাল থেকে বিকেল কিভাবে কাটল তা বলা কঠিন। অজানার অপেক্ষায় আর উত্তেজনায় সময় দ্বিগুন গতিতে কেটে গেল। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হওয়ার মুখেই বারুইপুর ফায়ার ব্রিগেডের কাছে সার্কাসের সামনে উপস্থিত হলাম। এবং তারপর টিকিট কেটে সোজা ভেতরে।
সাড়ে চারটের শো। এখন সোয়া চার। হাতে কিছুটা সময় আছে দেখে কাপড়ের তাঁবুর সামনেটায় দাঁড়িয়ে একটা সিগারেট ধরালাম। ডিসেরম্বরের শুরু, তাও ঠান্ডাটা ভালো করে পড়েনি। একটা শিরশিরে ভাব আছে শুধু। তবে এদিকটা ফাঁকা বলে মনে হয় হাওয়াটাও বেশি। কলকাতার দিকে যন্ত্র আর মানুষের ঠেলাঠেলিতে শীতকেও জায়গা করে নিতে অসুবিধে হচ্ছে। মাঝে মাঝে মনে হয় মানুষ নিজের চাহিদার জন্য কতকিছু করে ফেলছে, তার সবই কি ভালোর দিকে যাচ্ছে? অনুরাধার কথা মনে পড়ে গেল।
“সৌম্য!”
ডাক পড়েছে। তার মানে শো শুরু হয়েছে। সিগারেটটা ছুঁড়ে ফেলে ঢুকে পড়লাম।
প্রথম আধঘন্টা-চল্লিশ মিনিট এটা ওটা দেখানোর পরেই আসল খেলা শুরু হল। নররাক্ষস। দর্শকদের হাততালি, উৎকন্ঠা আর উত্তেজনার মধ্যেই স্টেজের ডানদিকের পর্দার আড়াল থেকে সাড়ে ছ’ফুট লম্বা যে চেহারাটা বেরিয়ে এল, তাকে নররাক্ষস না বলে অনায়াসে রাক্ষস বলেও চালানো যায়। গোটা মুখে লাল রঙ মেখে আরও বীভৎস লাগছে। এ জিনিস পথেঘাটে কেউ দেখলে নির্ঘাৎ হার্টফেল করবে।
খেলা শুরু হল। কিলো কিলো শাকসব্জী কাঁচা খেতে দেখে উৎসাহ কমে গেল। চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে তাঁবুর ওপরের দিকে তাকালাম। হলুদ রঙের কাপড় দিয়ে তৈরী ছাউনির দিকে চেয়ে বহুদিন আগের অনামিকার কথা মনে পড়ে গেল।
অনামিকা। অবশ্য এটা ওর আসল নাম নয়। নিষেধ করেছিল আসল নাম নিতে। ওর মত মেয়ে খুব কম দেখেছি। খুব সাধারন, অথচ কি অসাধারন। মিথ্যে বলবনা, অল্প কয়েকদিনের আলাপেই অনামিকাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম। তবে এই ভালোবাসা প্রেমিকের ভালোবাসা নয়। একটু আলাদা। অবশ্য বলতে পারিনি ওকে কোনওদিন। হয়তো বললে বুঝতও না। কোনও এক অচেনা, অজানা জগতের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়তে চেয়েছিল ও। যেখানে ওকে কেউ কোনও মাপকাঠিতে বিচার করবেনা। উদ্দেশ্যহীনভাবে ভালোবাসবে। ‘আপনি আমার সাথে আসতে পারেন, পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত।’ আমি বলেছিলাম। কিন্তু সাড়া পাইনি। হয়তো ও ভয় পেয়েছিল। অনামিকা একজনকে ভালোবাসত। মনপ্রাণ দিয়ে। তাই ভুলতে হয়েছিল ওকে, বাধ্য হয়ে।
একটা জান্তব চীৎকারে স্টেজের দিকে চোখ পড়তে বুঝতে পারলাম খেলা বদলে গেছে। এবার খেলা জন্তুর সাথে মানুষের। আর্তনাদটা এসেছে জন্তুর গলা থেকে। একটা মুরগী। বিধাতার হাতে বন্দী নিরূপায় মানুষের মতোই অট্টহাস্যরত নররাক্ষসটার বাঁহাতের ফাঁকে ছটফট করছে জ্যান্ত একটা মুরগী। আসন্ন মৃত্যুর গন্ধে দর্শকদের মধ্যে চঞ্চলতা লক্ষ্য করলাম। জীবনের শেষ ইঙ্গিতস্বরূপ পাগলের মতোন নিস্ফল প্রয়াসে একবার ডেকে উঠল পাখিটা। খেলা শুরু হল।
জ্যান্ত মুরগীটাকে বাঁহাতে ধরে ডানহাত দিয়ে গলাটা মুচড়ে দিল সে। মাটি থেকে ছ’ফুট উঁচুতে ধরা মুরগীটার পাদু’টো তখনও ক্রমাগত হাওয়ায় সাঁতরে চলেছে। এলোপাথাড়ি, পাগলের মতো। কয়েক মিনিটের মধ্যে ব্যাপারটা স্তিমিত হয়ে আসে। আমার পাশের দর্শকাসনে বসে থাকা লোকেরা নিশ্চুপ। আমার মতোই তারাও বিনা বাক্যব্যয়ে নিষ্ঠুর এক মৃত্যুকে প্রত্যক্ষ করছে।
নিথর মুরগীটার দেহ থেকে পালকগুলো ছাড়াতে থাকে লোকটা। মুরগীটার নগ্ন, রক্তাক্ত দেহ থেকে লোকটার নোংরা হাত দিয়ে পালক ছাড়ানোর দৃশ্য দেখে অনুরাধার কথা মনে পড়ে গেল। নীল হয়তো এভাবেই শহরের কোনও এক অজানা, অচেনা অন্ধকার কোণায় ওর শরীরটাকে উপভোগ করেছিল। আবেগের বশেই অনুরাধা একদিন আমার কাছে নীলের সাথে ওর শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার কথা বলে ফেলেছিল। আন্দাজ অবশ্য আমি আগেই করেছিলাম। চতুষ্কোণ প্রেম। অদ্ভুত সম্পর্ক। আমি অনুরাধাকে ভালোবাসি। অনুরাধা পাগলের মতোন চায় নীলকে। এদিকে নীল আর মধুরার প্রেম সর্বজনবিদিত। যা হওয়ার তাই হয়েছিল। অনুরাধাকে ব্যবহার করে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল নীল, চলে গিয়েছিল মধুরার সাথে। ভালোবাসার ওপর থেকে বিশ্বাস চলে গিয়েছিল অনুরাধার। শরীরী ভালোবাসাকে আপন করে নিয়ে মানুষের ভীড়ে হারিয়ে গিয়েছিল। আর ফেলে গিয়েছিল আমাকে - যে ভালোবাসার অন্ধ বিশ্বাসে সব মুখের মধ্যেই সেই চেনা মুখটা খুজে বেড়াতে শুরু করেছিল...পাগলের মত।
ইতিমধ্যে মুরগী-নিধন ও উদরসাৎ পর্ব শেষ হয়। যে খেলার শুরু হয়েছিল হাততালি দিয়ে, তা শেষ হয় নিস্তব্ধতা দিয়ে। পাশে তাকিয়ে দেখলাম দেবোপমের সীট ফাঁকা। উঠে গেছে কখন, টের পাইনি। সহ্য না করার মতোই ব্যাপার। গায়ক মানুষ ও, এরকম জ্যান্ত মুরগী ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাওয়ার দৃশ্য ওর নরম মন সইতে পারবেনা।
এই হেন ‘নররাক্ষস’-খ্যাত সার্কাস দেখার পর তিনজনেই নিজের নিজের বাড়ি ফিরে এলাম। বেশ কিছুদিন কেটেও গেল। কিন্তু একটা অস্বস্তি মনের মধ্যে রয়ে গেল। বারবারই মনে হতে লাগল, কি একটা যেন ঠিক নেই, কি একটা ধরতে পারলাম না, এমন কিছু একটা হয়ে গেল, যেটা বোঝা উচিত ছিল, কিন্তু পারলাম না।
একদিন সন্ধেবেলা হাটতে হাটতে রবীন্দ্র সরোবরের ধারে গিয়ে বসলাম। একা। নির্জনে, নিভৃতে বসে একটু ভাবনাচিন্তা করার জন্য। অনুরাধা বারবার জিজ্ঞেস করত আমার এই পাগলামির কারন। কেন কারন-অকারনে, সময়-অসময়ে এখানে এসে বসে থাকি। ঠিকঠাক উত্তর কোনওদিনই দিতে পারিনি। হয়তো ঠিক উত্তরটা আমি নিজেও জানতাম না। অনুরাধার কথা ভাবতে ভাবতেই নিজের জীবনের সাথে ওর কথা মিলিয়ে একটা প্রশ্ন মাথায় চলে এল, আর সঙ্গে সঙ্গে পুরো গল্পটা যেন ধোঁয়াশামাখা পর্দার আড়াল থেকে আমার সামনে বেরিয়ে এসে দাঁড়িয়ে পড়ল।
“নররাক্ষস কে?”
হ্যাঁ। প্রশ্ন এটাই। কে এই নররাক্ষস? একজন, যে সময় আর সুযোগের সঠিক ব্যবহার করে রাক্ষসের মত ছিঁড়ে খুঁড়ে খেয়েছে একটা মেয়ের শরীর, নিঃস্ব করে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে এক কোণায় আর চলে গেছে অন্য এক নারীর সাথে মুখোশপরা ভালোমানুষের মত জীবনের বাকী সময়টা কাটাবে বলে। নাকি অন্য একজন, যে একজন সৎ মানুষের মত থাকতে চেয়েছিল এক নারীর পাশে, বার বার প্রত্যাখ্যাত হয়েও মানতে চায়নি হার, শপথ নিয়েছিল সেই মেয়েকে সে রক্ষা করবেই এক পশুর হাত থেকে...কিন্তু সেই কথা রক্ষা করতে না পেরে এক প্রেতাত্মার মত জীবন যাপন করে চলেছে, এক রাক্ষসের মতোই নিজের সব সুখ, দুঃখ, ব্যথা, বেদনা ভুলে কীসের খোঁজে ছুটে চলেছে সে নিজেও জানেনা?
প্যান্ট ঝেড়ে উঠে পড়লাম। সরোবরের ওপাশটার কালো অন্ধকারে ধূসর সাদা পর্দার মতোন কুয়াশা। ডিসেম্বর মাস। আর গাছপালা বেশী থাকায় এদিকটায় ঠান্ডাটা একটু বেশীই পড়ে। বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। এলোমেলো পায়ে, মাথায় অজস্র হিজিবিজি চিন্তা নিয়ে। দূরের ল্যাম্পপোস্ট থেকে ঠিকরে পড়া আলোয় পেছনে একটা আবছা ছায়ার সৃষ্টি করেছে। একটু পরে হয়ত ওটাও মিলিয়ে যাবে। মিলিয়ে যাব আমি, অন্ধকার, আর এই রাত্রি।
ভালোবাসা মানুষকে কাছে আনেনা। বরং আরও দূরে ঠেলে দেয়। কিন্তু এই ক্ষণিকের পাওয়াই তার কাছে সব। মানুষের ভালোবাসা মানুষকে অন্ধ করেছে, করেছে লোভী। নামিয়ে এনেছে অন্ধকারের এক স্তর থেকে আরেক স্তরে। সন্ধের ম্লান অন্ধকারে ভাষা খুঁজে না-পাওয়া দুই শরীরের মত। এই পাপ ছিল, আছে, থাকবে। মানুষের মনে। ঠেলে দেবে অন্য কোনও মানুষকে এক নির্মম পরিণতির দিকে। যতদিন সে থাকবে, এক নারী থেকে আরেক নারীতে ঘুরে বেড়াবে, দিনের বেলা নর আর রাতের অন্ধকারে রাক্ষসের রূপ ধরে তান্ডব করবে, চোখের জল আর বিনিদ্র রাতের মাঝখানে হেসে বেড়াবে ‘হাহা’ করে, আর শেষরাতের স্বপ্নে তার সাদা দাঁত আর জ্বলজ্বলে হলুদ চোখদুটো বার করে বলবে –
“নররাক্ষস!”
- Dec 22nd '11
Notes from a living room: 20
Ahh. What a relief. Writing another note almost after three weeks. And within these weeks, many things have happened. Yeah well, I better not spill everything out...but then again, I have finished 'At five in the afternoon' which obviously, was not much of my credit anyway, and there was this exam called 'SNAP' which literally 'slapped' all those appearing in the exam, in the form of wrong questions, questions without right answers, plagiarism in the paper, spelling mistakes and what not. Come on, after paying 1600 for an exam of two hours one can atleast expect a fair question, let alone be the thoughts of appearing in the exam from a 'four star hotel'-like place. But they failed. And failed bigtime.
By the way, I have just finished writing the story 'নররাক্ষস' in my diary and am hoping to type it down in my computer within a few days. So, yeah...I am active again. That's more of a good news for me. But then again, I am not sure what is going to be the next one, now.
-22nd Dec '11
By the way, I have just finished writing the story 'নররাক্ষস' in my diary and am hoping to type it down in my computer within a few days. So, yeah...I am active again. That's more of a good news for me. But then again, I am not sure what is going to be the next one, now.
-22nd Dec '11
Monday, December 19, 2011
At five in the afternoon
At five in the afternoon I think about them, and how all of them went away one by one. At five in the afternoon, I sit by the window of my room facing the road, look at people coming in and going away and think about them. At five in the afternoon is when I cry, for the ones I have lost, for the ones who could’ve been here with me and for the ones who went away…once, and for all.
I assimilate all the notes Srijita wrote, about me, about us and about other things, before she went away forever. I assimilate all the notes of conversation I took while I was with Ranja. And then I open my cabinet and summon the diary Pallabi left for me before committing suicide.
At five in the afternoon, is when I think about them and all the happenings when I was with them. Words flow in my mind, emotions are recalled from nowhere. But this is what keeps me alive.
“‘When I was in my primary classes, I wrote my life’s first paragraph on ‘myself’ – it was simple definition then in ten sentences. But today, it seems so complex to define myself in ten lines. Perhaps it is because I hold no more a pencil in my hands, and I will not be able to take back the words that come out of my mouth today.’ She said.
‘Well, you can still try.’ I smiled.
‘Okay. I guess I will try. I like being a 'son' to my dad. So do you. I like being a ‘kiddo’ to my mom. So do you. I laugh out loud when ecstatic. So do you. I cry bitter tears in pain. So do you. I scream my throat out in anger. So do you. I grow with each day. So do you. Time is my teacher. So is yours.
Not much difference, you see...but still there are, loads of them. Explore.’
‘Well, I intend to. Maybe one day I will write about you.’ I smiled again.
‘If you are willing to write pain, use a pencil. If you are willing to write smiles, use a pen.
I am selfish. That’s what I am and you too are. So that’s how I will summarize myself.’ ”
I kept my promise, Ranja. I tell myself, as I lose out my mind in the past again.
“When we were young, Friendship day meant going around tying pieces of strings on friends' wrists, thinking and hoping that those bits of threads would keep us connected forever. Today on the eve of Friendship day, being on a social networking site, writing on an electronic page and waiting for electronic impulses to put my thoughts and feelings across to the world, friendship has quintessentially remained the same for me. I may not have a riot of colours in the form of friendship bands waiting to adorn someone's wrist but I do have my words, which are as good as anything else. So here's wishing a world of goodness and happiness to those friends whom i had, lost and found again and those whom i never had but found and don't want to lose, HAPPY FRIENDSHIP DAY guys.”
I feel sorry for you Srijita. I thought. Not because you are not here with me anymore, but because you let me go away. Because you let me say those words, ‘I am going away, once and for all. You will never hear anything from me again.’ Because you never stopped me from going away, because you kept pushing me away until the day actually came when I had to put an end to our friendship. Happy friendship day, Srijita. I wish we could have been together. I wish we could’ve been friends, forever. But maybe it was not written at all. I still remember the day when we talked about love…
“‘Everything about it is clandestine, stripped of purity and comfort…the pulsating carnal taste of emotions. The desire to let everything go and plunge into the darkness of wrong. It takes a very long time to resurface from such a maelstrom but when you are sitting at a safe height, looking away from temptation, a flitting glint catches your eye, forcing you to look its way. And you are thrown right back into what you escaped from.
For some it is always a war, always a new enemy to overcome, always a different demon to slay. They keep shoving their way through disarray and confusion, never knowing when to stop, with no respite in sight. Forever a mass of disgust, unwillingness, cynicism and lassitude. Always lingering at the edge of sanity, threatening to topple over any time but always, always abstaining at the last moment. All of a sudden they hit a solid mass of black and groping in the darkness, they find only concrete. For they have reached their limits, there is nowhere to go beyond this. With their backs against the wall they face the onslaught, knowing only too well that unless help came fast, they would very soon run out of a reason or a way to keep fighting...’
‘I read what you wrote. Is that what your take on love is?’ I ask her.
‘I don’t know. A feeling of tranquility, I've locked away my heart. When people ask me how I feel about nothing in particular I actually have to ask that ever throbbing organ what it feels because it doesn't talk to me anymore. It doesn't cry, it doesn't laugh, it doesn't care, and it’s so scared that it refuses to face reality but then again it is loath to ponder over surrealism too. Strange, what I have let it become. Every second that it lets me breath is a blessing and yet it gets nothing in return. So much pain, I've broken it into too many pieces for me to even count, but what could I do? A heartbeat is not enough to survive when you are man. The very fact that you feel assures you that you are something more than a mere existence. All I wanted was to live but I guess it's not easy to come by, living I mean. So I've stopped. They say survival is more than mere existence but for me the line of difference exists no more. I'm sorry, that I couldn't give you anything more than what I did; I wish you had belonged to someone else. But selfish as I am, I beg you to not leave me because then I'll cease to exist’ ”
It’s her last note which said it all, in my opinion. She regretted that she left me. But then again we were in no position to get back to each other. Life had other plans…atleast different from what I thought. I had always warned her not to fall for someone who was committed to someone else. But love knows no bounds. It happened what I saw a long time ago.
“When you fall in love with someone you shouldn’t (especially if that someone already has a girlfriend/ boyfriend), you're lucky if the guy/ girl falls for you too and acknowledges it. You're luckier if there is someone else who knows that you're doing the wrong thing but resolutely continues to love you, while you are being a complete prick-head! One day your prince Charming/ Cinderella takes flight(or dies) and when you think that there's nothing to go on for, you feel a pressure on your hand and realize that there is someone holding it, encouraging you to live. If you can see the love in those eyes, you're saved because even if you can’t (or take too long to) love back, his/her love is enough for you both.
Now imagine the same scenario, when the first guy/girl falls for you but doesn't acknowledge it, while expecting you to behave like his/her consort. Also there is no 'the other guy'. What do you do when the person you fell for leaves (but doesn't die) and you think that there's something to go on for?
You pick yourself up, scrub your gritty face, look ahead and say Encule!”
I sit on one of the benches at the lake place. It’s evening. Someone is playing violin somewhere very near. A monotonous, yet sad tune. It is played for some time, then it ends, and then starts again. The gloomy notes hover in the air of the lonely lake place. The evening breeze takes the tune faraway, as an owl’s cry is heard from the topmost branch of a tree residing at the farthest part of Southern avenue.
I close my eyes.
“You fell in love with someone you shouldn’t, Soumyo…look ahead…A feeling of tranquility… I am selfish. That’s what I am and you too are…hah ha ha…I beg you to not leave me…why are you always unhappy…have you got your things back…happy new year Soumyo… but still there are, loads of them…I know you love me… you know my mother too…there is someone else…Soumyo… Soumyo!”
I open my eyes. The music has stopped. I take a cigarette out of the packet. I hold it in my mouth while striking the stick against the side of the matchbox. Once, twice and thrice. Silent evening is pierced by the sound of striking matchstick. It creates a flash out of nowhere and then it creates light. Darkness seems to go away from me for a moment. I lit the cigar.
“I am leaving something for you Soumyo. Something only for you. Remember me the way I was, in your life.”
And then she went away. Pallabi. Just like that. Left the mortal world as if in a hurry. And yes, she left me a diary, except for the fact that absolutely nothing was written inside it. So the question remained, why did she leave it for me, at all?
I don’t know. Or perhaps I never wanted to know. Maybe she wanted to give me a message through those words that were not said, were not written at all. Sometimes it is the silence, who talks more than words. Maybe she was out of words; maybe she was out of time, to write anything at all.
I stand up, and then walk towards my home. My home, my room, and the window by which I sit and write most of the time. The room attracts me more than anything else. Not only just because it reminds me of them, but also because I feel I am with them all the time, when I am with myself, alone.
At five in the afternoon I think about them, and how all of them went away one by one. At five in the afternoon, I sit by the window of my room facing the road, look at people coming in and going away and think about them. At five in the afternoon is when I cry, for the ones I have lost, for the ones who could’ve been here with me and for the ones who went away…once, and for all.
-Dec 19th '11
I assimilate all the notes Srijita wrote, about me, about us and about other things, before she went away forever. I assimilate all the notes of conversation I took while I was with Ranja. And then I open my cabinet and summon the diary Pallabi left for me before committing suicide.
At five in the afternoon, is when I think about them and all the happenings when I was with them. Words flow in my mind, emotions are recalled from nowhere. But this is what keeps me alive.
“‘When I was in my primary classes, I wrote my life’s first paragraph on ‘myself’ – it was simple definition then in ten sentences. But today, it seems so complex to define myself in ten lines. Perhaps it is because I hold no more a pencil in my hands, and I will not be able to take back the words that come out of my mouth today.’ She said.
‘Well, you can still try.’ I smiled.
‘Okay. I guess I will try. I like being a 'son' to my dad. So do you. I like being a ‘kiddo’ to my mom. So do you. I laugh out loud when ecstatic. So do you. I cry bitter tears in pain. So do you. I scream my throat out in anger. So do you. I grow with each day. So do you. Time is my teacher. So is yours.
Not much difference, you see...but still there are, loads of them. Explore.’
‘Well, I intend to. Maybe one day I will write about you.’ I smiled again.
‘If you are willing to write pain, use a pencil. If you are willing to write smiles, use a pen.
I am selfish. That’s what I am and you too are. So that’s how I will summarize myself.’ ”
I kept my promise, Ranja. I tell myself, as I lose out my mind in the past again.
“When we were young, Friendship day meant going around tying pieces of strings on friends' wrists, thinking and hoping that those bits of threads would keep us connected forever. Today on the eve of Friendship day, being on a social networking site, writing on an electronic page and waiting for electronic impulses to put my thoughts and feelings across to the world, friendship has quintessentially remained the same for me. I may not have a riot of colours in the form of friendship bands waiting to adorn someone's wrist but I do have my words, which are as good as anything else. So here's wishing a world of goodness and happiness to those friends whom i had, lost and found again and those whom i never had but found and don't want to lose, HAPPY FRIENDSHIP DAY guys.”
I feel sorry for you Srijita. I thought. Not because you are not here with me anymore, but because you let me go away. Because you let me say those words, ‘I am going away, once and for all. You will never hear anything from me again.’ Because you never stopped me from going away, because you kept pushing me away until the day actually came when I had to put an end to our friendship. Happy friendship day, Srijita. I wish we could have been together. I wish we could’ve been friends, forever. But maybe it was not written at all. I still remember the day when we talked about love…
“‘Everything about it is clandestine, stripped of purity and comfort…the pulsating carnal taste of emotions. The desire to let everything go and plunge into the darkness of wrong. It takes a very long time to resurface from such a maelstrom but when you are sitting at a safe height, looking away from temptation, a flitting glint catches your eye, forcing you to look its way. And you are thrown right back into what you escaped from.
For some it is always a war, always a new enemy to overcome, always a different demon to slay. They keep shoving their way through disarray and confusion, never knowing when to stop, with no respite in sight. Forever a mass of disgust, unwillingness, cynicism and lassitude. Always lingering at the edge of sanity, threatening to topple over any time but always, always abstaining at the last moment. All of a sudden they hit a solid mass of black and groping in the darkness, they find only concrete. For they have reached their limits, there is nowhere to go beyond this. With their backs against the wall they face the onslaught, knowing only too well that unless help came fast, they would very soon run out of a reason or a way to keep fighting...’
‘I read what you wrote. Is that what your take on love is?’ I ask her.
‘I don’t know. A feeling of tranquility, I've locked away my heart. When people ask me how I feel about nothing in particular I actually have to ask that ever throbbing organ what it feels because it doesn't talk to me anymore. It doesn't cry, it doesn't laugh, it doesn't care, and it’s so scared that it refuses to face reality but then again it is loath to ponder over surrealism too. Strange, what I have let it become. Every second that it lets me breath is a blessing and yet it gets nothing in return. So much pain, I've broken it into too many pieces for me to even count, but what could I do? A heartbeat is not enough to survive when you are man. The very fact that you feel assures you that you are something more than a mere existence. All I wanted was to live but I guess it's not easy to come by, living I mean. So I've stopped. They say survival is more than mere existence but for me the line of difference exists no more. I'm sorry, that I couldn't give you anything more than what I did; I wish you had belonged to someone else. But selfish as I am, I beg you to not leave me because then I'll cease to exist’ ”
It’s her last note which said it all, in my opinion. She regretted that she left me. But then again we were in no position to get back to each other. Life had other plans…atleast different from what I thought. I had always warned her not to fall for someone who was committed to someone else. But love knows no bounds. It happened what I saw a long time ago.
“When you fall in love with someone you shouldn’t (especially if that someone already has a girlfriend/ boyfriend), you're lucky if the guy/ girl falls for you too and acknowledges it. You're luckier if there is someone else who knows that you're doing the wrong thing but resolutely continues to love you, while you are being a complete prick-head! One day your prince Charming/ Cinderella takes flight(or dies) and when you think that there's nothing to go on for, you feel a pressure on your hand and realize that there is someone holding it, encouraging you to live. If you can see the love in those eyes, you're saved because even if you can’t (or take too long to) love back, his/her love is enough for you both.
Now imagine the same scenario, when the first guy/girl falls for you but doesn't acknowledge it, while expecting you to behave like his/her consort. Also there is no 'the other guy'. What do you do when the person you fell for leaves (but doesn't die) and you think that there's something to go on for?
You pick yourself up, scrub your gritty face, look ahead and say Encule!”
I sit on one of the benches at the lake place. It’s evening. Someone is playing violin somewhere very near. A monotonous, yet sad tune. It is played for some time, then it ends, and then starts again. The gloomy notes hover in the air of the lonely lake place. The evening breeze takes the tune faraway, as an owl’s cry is heard from the topmost branch of a tree residing at the farthest part of Southern avenue.
I close my eyes.
“You fell in love with someone you shouldn’t, Soumyo…look ahead…A feeling of tranquility… I am selfish. That’s what I am and you too are…hah ha ha…I beg you to not leave me…why are you always unhappy…have you got your things back…happy new year Soumyo… but still there are, loads of them…I know you love me… you know my mother too…there is someone else…Soumyo… Soumyo!”
I open my eyes. The music has stopped. I take a cigarette out of the packet. I hold it in my mouth while striking the stick against the side of the matchbox. Once, twice and thrice. Silent evening is pierced by the sound of striking matchstick. It creates a flash out of nowhere and then it creates light. Darkness seems to go away from me for a moment. I lit the cigar.
“I am leaving something for you Soumyo. Something only for you. Remember me the way I was, in your life.”
And then she went away. Pallabi. Just like that. Left the mortal world as if in a hurry. And yes, she left me a diary, except for the fact that absolutely nothing was written inside it. So the question remained, why did she leave it for me, at all?
I don’t know. Or perhaps I never wanted to know. Maybe she wanted to give me a message through those words that were not said, were not written at all. Sometimes it is the silence, who talks more than words. Maybe she was out of words; maybe she was out of time, to write anything at all.
I stand up, and then walk towards my home. My home, my room, and the window by which I sit and write most of the time. The room attracts me more than anything else. Not only just because it reminds me of them, but also because I feel I am with them all the time, when I am with myself, alone.
At five in the afternoon I think about them, and how all of them went away one by one. At five in the afternoon, I sit by the window of my room facing the road, look at people coming in and going away and think about them. At five in the afternoon is when I cry, for the ones I have lost, for the ones who could’ve been here with me and for the ones who went away…once, and for all.
-Dec 19th '11
Thursday, December 8, 2011
Sunday, December 4, 2011
When you can't run from yourself anymore
I am tired of running from myself. Yes, that's what I am - tired, very tired.
Oh my God, I am so tired. Tired of crying, and of my monotonous life. Bless me with a life, worth living...else whatever thing I have become, will die in silence, and you will watch everything in vain.
-Dec 4th '11
Oh my God, I am so tired. Tired of crying, and of my monotonous life. Bless me with a life, worth living...else whatever thing I have become, will die in silence, and you will watch everything in vain.
-Dec 4th '11
Subscribe to:
Posts (Atom)