Thursday, December 22, 2011

নররাক্ষস

রাজপুর পেরিয়ে বারুইপুর বাজার এসে পড়তেই রাস্তার পাশে বড় বড় হোর্ডিংগুলোয় লেখাটা চোখে পড়ল।


অবশ্য এর আগের ঘটনা বলে রাখা ভালো। খুড়তুতো দাদার বিয়ে উপলক্ষ্যে রওনা দেওয়ার আগেই এক নেটওয়ার্কিং সাইটে সুপ্রতিম মনে করিয়ে দিয়েছিল একটা ছোটো ডায়রি সঙ্গে রাখতে। মানে, নতুন কোনও গল্পের প্লট এলে যাতে লিখে রাখতে পারি। হেসেছিলাম। বিয়ের মত অনুষ্ঠানের মাঝখানে গল্পের কথা কেই বা চিন্তা করতে পারে? কিন্তু তত্ত্ব নিয়ে মেয়ের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার ঘন্টাখানেকের মধ্যেই আমার সে ধারনা গেল ভেঙ্গে। বাইপাস হয়ে কামালগাজীর রাস্তায় ঢুকে আধঘন্টা মতো যেতেই বারুইপুর বাজার চত্বর এসে পড়ল। প্রাইভেট গাড়ির শীততাপনিয়ন্ত্রিত আবহাওয়া উপভোগ করতে করতে পেছনের সীটে বসে থাকা খুড়তুতো ভাইয়ের সাথে গল্প করার ফাঁকেই বিশাল হোর্ডিং-এ লেখাটা চোখে পড়ল।


সার্কাস
বিশেষ আকর্ষণ
নররাক্ষস।
বিশালাক্ষি মাঠ।
বারুইপুর (ফায়ার ব্রিগেডের নিকট)



আকর্ষণীয়ই বটে। লেখার সাথে কয়েকটা ছবিও চোখে পড়ল। সব কটাই নররাক্ষসরূপী মানুষের। গাড়ির চালক চেনা লোক। এদিককারই। জিজ্ঞেস করতে বিস্তারিত জানিয়ে দিল। একের পর এক শো-তে শাক, পাতা, পাথর, কাঁটাগাছ, জ্যান্ত মুরগী সব খেয়ে ফেলছে, নিমেষে। আর তাকে দেখতেই উপচে পড়ছে ভীড়। নররাক্ষসই বটে। দিনে কমপক্ষে গড়ে চোদ্দ-পনেরটা শো হলে শুধু মুরগীই পেটে যাচ্ছে পনেরটা। লোকটাও নাকি অদ্ভুত। শুধু খেয়েই চলেছে। এতটুকু বিশ্রাম নেই। ক্লান্তিও নেই।

ড্রাইভারের কথায় কৌতুহল বাড়ল। ছবিতে নররাক্ষসের মুখের নৃশংস ভাব স্পষ্টই ফুটে উঠেছে। অত্যধিক লাল রঙে রাঙিয়ে দেওয়ার ফলে সে মুখ আরও ভয়াবহ লাগছে। জ্যান্ত মুরগী খাওয়ার দৃশ্য কল্পনা করে শিউরে উঠলাম। ড্রাইভারের কথা যদি ঠিক হয়, লোকটা সম্ভবত মানুষ নয়। অন্তত মনের দিক থেকে তো নয়ই। শুধু জীবন্ত প্রাণী খাওয়ার জন্যেই নয়, ইঁট, পাথর চিবিয়ে খাওয়ার মত ক্ষমতাও সাধারণ মানুষের নেই। নররাক্ষসই বটে।

অকাজের কথায় কান দিয়ে লাভ নেই ভেবে ‘নররাক্ষস’-কে মন থেকে ঝেড়ে ফেললাম। এর পরের দু’-তিনদিনে বিয়েবাড়ির হাজার কাজে কথাটা ভুলেই গেলাম। আনন্দ আর আলোর রোশনাই-এর মাঝে একটা আদিম মানুষের চিন্তা মাথায় আসার কথাও নয়। কিন্তু ভাগ্য মানুষকে যে কোথায় কিভাবে নিয়ে গিয়ে ফেলতে পারেকেউ জানেনা। তাই নররাক্ষসের কথা জানার একমাসের মধ্যেই যে তাকে স্বচক্ষে দেখতে পাব, একেবারে চোখের সামনে, একথাও ভেবে উঠতে পারিনি।

ঘটনাটা ঘটল এরকম, সাউথ ফ্লোরিডাতে থাকা এক বন্ধুর ছুটিতে কলকাতায় ফেরার কথা ছিল। হঠাৎই একদিন বাড়িতে ফোন।

“হ্যালো সৌম্য?”

“কিরে অনন্ত নাকি? কবে ফিরলি?”

“এইতো গত পরশু। এখনও জেটল্যাগ কাটেনি। শোন, যে কারনে ফোনটা করা, সামনের শুক্রবার আমি আমাদের আদি বাড়িটায় যাচ্ছি। জমি সংক্রান্ত কিছু ব্যাপার। কিন্তু সেটাই বড় কথা নয়। তোকে আর দেবোপমকেও আসতে হবে। দু’-তিনদিন জমিয়ে আড্ডা মারা যাবে।”

“তোদের আদি বাড়ি মানে ওই বারুইপুরেরটা তো?”

“হ্যাঁ। দেবোপমকে আগেই ফোন করেছি। ওর আপত্তি নেই। তোর সময় হবে তো?”

“নিশ্চয়ই।”

“বেশ। তাহলে শুক্রবার দেখা হচ্ছে। তোদের জন্য আলাদা করে ঘরগুলো পরিষ্কার করে রাখতে বলেছি ওখানের কাজের লোকগুলোকে। এখন ছাড়লাম তাহলে।”


কথামতো শুক্রবার বিকেলের মধ্যেই অনন্তদের আদি বাড়িটায় এসে পড়লাম। মনে পড়ল ছোটোবেলায় আমরা এই বাড়িটায় একসময় খেলতাম। বয়সের সাথে মানুষ কতটা বদলে যায়। শুধু বদলায়না সেই স্মৃতিগুলো। লম্বা দালানের বাঁদিকে গাড়িটাকে রেখে দোতলায় এসে দেখি দেবোপম আগেই এসে পড়েছে। অনেকদিন পর ওদের দেখে খুব ভালো লাগল। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিন পুরোনো বন্ধুতে আড্ডা জমে উঠল।

রাতের খাওয়া-দাওয়াটা বেশ ভালোই হল। বাইরে থেকে অর্ডার দিয়ে আনানো পোলাও, মাংস, রাশীকৃত তরকারি ও মিষ্টান্ন উদরসাৎ করে তিনজনে চাঁদের আলোয় বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম। ঘুম পেয়ে গিয়েছিল। তাই একথা-সেকথার পর শুভরাত্রি জানিয়ে নিজের ঘরে ফিরে আসছি, এমন সময়ে অনন্ত ডাকল।

“ভালো কথা, এখানে সামনে সার্কাস এসেছে। তোরা চাইলে কাল একবার ঘুরে আসা যায়।”

আমার মুখ দিয়ে বেরিয়ে পড়ল, “এটা কি সেই নররাক্ষসের ব্যাপারটা?”

“হ্যাঁ। ওটার জন্যই যাওয়া।” বিস্ময়মাখানো গলায় অনন্ত বলল।

ব্যাপারটা যে আগে শুনেছি, আর নররাক্ষসকে দেখার ইচ্ছে যে আমারও ছিল, সে কথা আর বলা হয়ে উঠল না।


পরেরদিন সকাল থেকে বিকেল কিভাবে কাটল তা বলা কঠিন। অজানার অপেক্ষায় আর উত্তেজনায় সময় দ্বিগুন গতিতে কেটে গেল। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হওয়ার মুখেই বারুইপুর ফায়ার ব্রিগেডের কাছে সার্কাসের সামনে উপস্থিত হলাম। এবং তারপর টিকিট কেটে সোজা ভেতরে।

সাড়ে চারটের শো। এখন সোয়া চার। হাতে কিছুটা সময় আছে দেখে কাপড়ের তাঁবুর সামনেটায় দাঁড়িয়ে একটা সিগারেট ধরালাম। ডিসেরম্বরের শুরু, তাও ঠান্ডাটা ভালো করে পড়েনি। একটা শিরশিরে ভাব আছে শুধু। তবে এদিকটা ফাঁকা বলে মনে হয় হাওয়াটাও বেশি। কলকাতার দিকে যন্ত্র আর মানুষের ঠেলাঠেলিতে শীতকেও জায়গা করে নিতে অসুবিধে হচ্ছে। মাঝে মাঝে মনে হয় মানুষ নিজের চাহিদার জন্য কতকিছু করে ফেলছে, তার সবই কি ভালোর দিকে যাচ্ছে? অনুরাধার কথা মনে পড়ে গেল।

“সৌম্য!”

ডাক পড়েছে। তার মানে শো শুরু হয়েছে। সিগারেটটা ছুঁড়ে ফেলে ঢুকে পড়লাম।

প্রথম আধঘন্টা-চল্লিশ মিনিট এটা ওটা দেখানোর পরেই আসল খেলা শুরু হল। নররাক্ষস। দর্শকদের হাততালি, উৎকন্ঠা আর উত্তেজনার মধ্যেই স্টেজের ডানদিকের পর্দার আড়াল থেকে সাড়ে ছ’ফুট লম্বা যে চেহারাটা বেরিয়ে এল, তাকে নররাক্ষস না বলে অনায়াসে রাক্ষস বলেও চালানো যায়। গোটা মুখে লাল রঙ মেখে আরও বীভৎস লাগছে। এ জিনিস পথেঘাটে কেউ দেখলে নির্ঘাৎ হার্টফেল করবে।

খেলা শুরু হল। কিলো কিলো শাকসব্জী কাঁচা খেতে দেখে উৎসাহ কমে গেল। চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে তাঁবুর ওপরের দিকে তাকালাম। হলুদ রঙের কাপড় দিয়ে তৈরী ছাউনির দিকে চেয়ে বহুদিন আগের অনামিকার কথা মনে পড়ে গেল।

অনামিকা। অবশ্য এটা ওর আসল নাম নয়। নিষেধ করেছিল আসল নাম নিতে। ওর মত মেয়ে খুব কম দেখেছি। খুব সাধারন, অথচ কি অসাধারন। মিথ্যে বলবনা, অল্প কয়েকদিনের আলাপেই অনামিকাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম। তবে এই ভালোবাসা প্রেমিকের ভালোবাসা নয়। একটু আলাদা। অবশ্য বলতে পারিনি ওকে কোনওদিন। হয়তো বললে বুঝতও না। কোনও এক অচেনা, অজানা জগতের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়তে চেয়েছিল ও। যেখানে ওকে কেউ কোনও মাপকাঠিতে বিচার করবেনা। উদ্দেশ্যহীনভাবে ভালোবাসবে। ‘আপনি আমার সাথে আসতে পারেন, পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত।’ আমি বলেছিলাম। কিন্তু সাড়া পাইনি। হয়তো ও ভয় পেয়েছিল। অনামিকা একজনকে ভালোবাসত। মনপ্রাণ দিয়ে। তাই ভুলতে হয়েছিল ওকে, বাধ্য হয়ে।

একটা জান্তব চীৎকারে স্টেজের দিকে চোখ পড়তে বুঝতে পারলাম খেলা বদলে গেছে। এবার খেলা জন্তুর সাথে মানুষের। আর্তনাদটা এসেছে জন্তুর গলা থেকে। একটা মুরগী। বিধাতার হাতে বন্দী নিরূপায় মানুষের মতোই অট্টহাস্যরত নররাক্ষসটার বাঁহাতের ফাঁকে ছটফট করছে জ্যান্ত একটা মুরগী। আসন্ন মৃত্যুর গন্ধে দর্শকদের মধ্যে চঞ্চলতা লক্ষ্য করলাম। জীবনের শেষ ইঙ্গিতস্বরূপ পাগলের মতোন নিস্ফল প্রয়াসে একবার ডেকে উঠল পাখিটা। খেলা শুরু হল।

জ্যান্ত মুরগীটাকে বাঁহাতে ধরে ডানহাত দিয়ে গলাটা মুচড়ে দিল সে। মাটি থেকে ছ’ফুট উঁচুতে ধরা মুরগীটার পাদু’টো তখনও ক্রমাগত হাওয়ায় সাঁতরে চলেছে। এলোপাথাড়ি, পাগলের মতো। কয়েক মিনিটের মধ্যে ব্যাপারটা স্তিমিত হয়ে আসে। আমার পাশের দর্শকাসনে বসে থাকা লোকেরা নিশ্চুপ। আমার মতোই তারাও বিনা বাক্যব্যয়ে নিষ্ঠুর এক মৃত্যুকে প্রত্যক্ষ করছে।

নিথর মুরগীটার দেহ থেকে পালকগুলো ছাড়াতে থাকে লোকটা। মুরগীটার নগ্ন, রক্তাক্ত দেহ থেকে লোকটার নোংরা হাত দিয়ে পালক ছাড়ানোর দৃশ্য দেখে অনুরাধার কথা মনে পড়ে গেল। নীল হয়তো এভাবেই শহরের কোনও এক অজানা, অচেনা অন্ধকার কোণায় ওর শরীরটাকে উপভোগ করেছিল। আবেগের বশেই অনুরাধা একদিন আমার কাছে নীলের সাথে ওর শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার কথা বলে ফেলেছিল। আন্দাজ অবশ্য আমি আগেই করেছিলাম। চতুষ্কোণ প্রেম। অদ্ভুত সম্পর্ক। আমি অনুরাধাকে ভালোবাসি। অনুরাধা পাগলের মতোন চায় নীলকে। এদিকে নীল আর মধুরার প্রেম সর্বজনবিদিত। যা হওয়ার তাই হয়েছিল। অনুরাধাকে ব্যবহার করে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল নীল, চলে গিয়েছিল মধুরার সাথে। ভালোবাসার ওপর থেকে বিশ্বাস চলে গিয়েছিল অনুরাধার। শরীরী ভালোবাসাকে আপন করে নিয়ে মানুষের ভীড়ে হারিয়ে গিয়েছিল। আর ফেলে গিয়েছিল আমাকে - যে ভালোবাসার অন্ধ বিশ্বাসে সব মুখের মধ্যেই সেই চেনা মুখটা খুজে বেড়াতে শুরু করেছিল...পাগলের মত।


ইতিমধ্যে মুরগী-নিধন ও উদরসাৎ পর্ব শেষ হয়। যে খেলার শুরু হয়েছিল হাততালি দিয়ে, তা শেষ হয় নিস্তব্ধতা দিয়ে। পাশে তাকিয়ে দেখলাম দেবোপমের সীট ফাঁকা। উঠে গেছে কখন, টের পাইনি। সহ্য না করার মতোই ব্যাপার। গায়ক মানুষ ও, এরকম জ্যান্ত মুরগী ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাওয়ার দৃশ্য ওর নরম মন সইতে পারবেনা।


এই হেন ‘নররাক্ষস’-খ্যাত সার্কাস দেখার পর তিনজনেই নিজের নিজের বাড়ি ফিরে এলাম। বেশ কিছুদিন কেটেও গেল। কিন্তু একটা অস্বস্তি মনের মধ্যে রয়ে গেল। বারবারই মনে হতে লাগল, কি একটা যেন ঠিক নেই, কি একটা ধরতে পারলাম না, এমন কিছু একটা হয়ে গেল, যেটা বোঝা উচিত ছিল, কিন্তু পারলাম না।

একদিন সন্ধেবেলা হাটতে হাটতে রবীন্দ্র সরোবরের ধারে গিয়ে বসলাম। একা। নির্জনে, নিভৃতে বসে একটু ভাবনাচিন্তা করার জন্য। অনুরাধা বারবার জিজ্ঞেস করত আমার এই পাগলামির কারন। কেন কারন-অকারনে, সময়-অসময়ে এখানে এসে বসে থাকি। ঠিকঠাক উত্তর কোনওদিনই দিতে পারিনি। হয়তো ঠিক উত্তরটা আমি নিজেও জানতাম না। অনুরাধার কথা ভাবতে ভাবতেই নিজের জীবনের সাথে ওর কথা মিলিয়ে একটা প্রশ্ন মাথায় চলে এল, আর সঙ্গে সঙ্গে পুরো গল্পটা যেন ধোঁয়াশামাখা পর্দার আড়াল থেকে আমার সামনে বেরিয়ে এসে দাঁড়িয়ে পড়ল।


“নররাক্ষস কে?”


হ্যাঁ। প্রশ্ন এটাই। কে এই নররাক্ষস? একজন, যে সময় আর সুযোগের সঠিক ব্যবহার করে রাক্ষসের মত ছিঁড়ে খুঁড়ে খেয়েছে একটা মেয়ের শরীর, নিঃস্ব করে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে এক কোণায় আর চলে গেছে অন্য এক নারীর সাথে মুখোশপরা ভালোমানুষের মত জীবনের বাকী সময়টা কাটাবে বলে। নাকি অন্য একজন, যে একজন সৎ মানুষের মত থাকতে চেয়েছিল এক নারীর পাশে, বার বার প্রত্যাখ্যাত হয়েও মানতে চায়নি হার, শপথ নিয়েছিল সেই মেয়েকে সে রক্ষা করবেই এক পশুর হাত থেকে...কিন্তু সেই কথা রক্ষা করতে না পেরে এক প্রেতাত্মার মত জীবন যাপন করে চলেছে, এক রাক্ষসের মতোই নিজের সব সুখ, দুঃখ, ব্যথা, বেদনা ভুলে কীসের খোঁজে ছুটে চলেছে সে নিজেও জানেনা?

প্যান্ট ঝেড়ে উঠে পড়লাম। সরোবরের ওপাশটার কালো অন্ধকারে ধূসর সাদা পর্দার মতোন কুয়াশা। ডিসেম্বর মাস। আর গাছপালা বেশী থাকায় এদিকটায় ঠান্ডাটা একটু বেশীই পড়ে। বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। এলোমেলো পায়ে, মাথায় অজস্র হিজিবিজি চিন্তা নিয়ে। দূরের ল্যাম্পপোস্ট থেকে ঠিকরে পড়া আলোয় পেছনে একটা আবছা ছায়ার সৃষ্টি করেছে। একটু পরে হয়ত ওটাও মিলিয়ে যাবে। মিলিয়ে যাব আমি, অন্ধকার, আর এই রাত্রি।


ভালোবাসা মানুষকে কাছে আনেনা। বরং আরও দূরে ঠেলে দেয়। কিন্তু এই ক্ষণিকের পাওয়াই তার কাছে সব। মানুষের ভালোবাসা মানুষকে অন্ধ করেছে, করেছে লোভী। নামিয়ে এনেছে অন্ধকারের এক স্তর থেকে আরেক স্তরে। সন্ধের ম্লান অন্ধকারে ভাষা খুঁজে না-পাওয়া দুই শরীরের মত। এই পাপ ছিল, আছে, থাকবে। মানুষের মনে। ঠেলে দেবে অন্য কোনও মানুষকে এক নির্মম পরিণতির দিকে। যতদিন সে থাকবে, এক নারী থেকে আরেক নারীতে ঘুরে বেড়াবে, দিনের বেলা নর আর রাতের অন্ধকারে রাক্ষসের রূপ ধরে তান্ডব করবে, চোখের জল আর বিনিদ্র রাতের মাঝখানে হেসে বেড়াবে ‘হাহা’ করে, আর শেষরাতের স্বপ্নে তার সাদা দাঁত আর জ্বলজ্বলে হলুদ চোখদুটো বার করে বলবে –

“নররাক্ষস!”






- Dec 22nd '11

7 comments:

  1. to start with such an cruel part and then to continue to something as beautiful as love and then to find out the dark secrets of that beautiful thing and link it with that cruel inhuman aspect...and all in the same story and so aptly and so mesmerizingly put together...u really really do have a huge talent with your pen. *RESPECT*
    this is your best piece till date (among the ones i have read)....loved it..truely and deeply..
    and Thank you! :)

    ReplyDelete
  2. are chobi tao osha..complete osha..and totally in tune with the story...more *respect* :) :)

    ReplyDelete
  3. Thanks a lot. And it feels good that people actually tell me that each new story of mine is better than the previous. It actually helps me to write with more energy every time.

    Yes, the illustration took a lot of time to complete. I hope it went well. :)

    ReplyDelete
  4. Being a part, however small it may be, in such a story gives a heavenly feeling. :)

    Won't say much. Just that your story is like biryani. Fact is the rice and fiction is the mixture of spices. But when they mingle, they create a delicious cuisine to savour. :)

    ReplyDelete
  5. I get extremely hungry when people give example with food. Especially good food. :(

    Thanks by the way. And I will keep that in mind from the next time, about carrying a notebook, that is.

    ReplyDelete
  6. achha hay :) .. U are becoming a philosopher day by day :) ..


    P.S. : Debopam-er kono dialog nei keno ? :P

    ReplyDelete
  7. Thank you. And I am no philosopher. I am just the guy who went after Varanasi like anything. :P

    And sorry. :( Debopam ke dialogue deoa gelo na.

    ReplyDelete